বর্তমান সময়ের জনপ্রিয় ভিডিও কনটেন্ট প্ল্যাটফর্ম ইউটিউব থেকে আয় করার ৫টি উপায় সম্পর্কে আজকে আপনাদের জানাতে যাচ্ছি। ভিডিও তৈরি করে যারা টাকা ইনকাম করার কথা চিন্তা করছেন তাদের জন্য সেরা একটি মাধ্যম হচ্ছে ইউটিউব, কিন্তু অনেক ইউটিউবার জানেন না ইউটিউব থেকে কত উপায়ে টাকা ইনকাম করা যায়।
ইউটিউব থেকে লোকেরা অনেক উপায়ে টাকা ইনকাম করছে, তার মধ্য থেকে অন্যতম ৫টি উপায় সম্পর্কে আজকে আমরা আলোচনা করব। ইউটিউব থেকে টাকা আয় করে নিজের জীবনের স্বাচ্ছন্দ নিয়ে এসেছেন এমন অনেক উদাহরণ রয়েছে বর্তমানে।
তাই ইউটিউব থেকে টাকা আয় করার সেরা উপায় গুলি সম্পর্কে একজন ইউটিউবারের জানা খুবই জরুরী। এছাড়াও আপনি যদি ইউটিউবিং করার চিন্তা ভাবনা করেন তাহলে অবশ্যই এই নিবন্ধনটি সম্পূর্ণ পড়ুন আপনার ধারণা পরিষ্কার হবে।
ইউটিউব থেকে আয় করার ৫টি উপায় – Top 5 Ways To Income YouTube in 2023
- বিজ্ঞাপন থেকে টাকা ইনকাম
- স্পন্সর ভিডিও করে টাকা ইনকাম
- এফিলিয়েট মার্কেটিং করে টাকা ইনকাম
- নিজের পণ্য বিক্রি করে টাকা ইনকাম
- সেবা বিক্রির মাধ্যমে টাকা ইনকাম
1. বিজ্ঞাপন থেকে টাকা ইনকাম
ভিডিও কনটেন্ট যারা তৈরি করেন তাদের প্রথম লক্ষ্য হচ্ছে বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে নিজেদের চ্যানেলকে মনিটাইজ করা। ইউটিউব থেকে আয় করার ৫টি উপায় এর সব থেকে বেশি পরিচিত হচ্ছে বিজ্ঞাপন থেকে আয়। একটি ইউটিউব চ্যানেল মনিটাইজেশন পেতে হলে প্রতিটি ইউটিউব চ্যানেলের কিছু শর্ত পূরণ করতে হয়।
বর্তমানে ইউটিউব চ্যানেল মনিটাইজেশন ক্রাইটেরিয়া হচ্ছে ৩৬৫ দিনের মধ্যে ১০০০ সাবস্ক্রাইবার এবং ৪০০০ ঘন্টা ওয়াচ টাইম পূর্ণ করা। যেকোনো ইউটিউব চ্যানেলে নিয়মিত কাজ করলে ১ থেকে ৩ মাসের মধ্যেই এই শর্তও পূরণ করে ইউটিউব মনিটাইজেশন অন করা যায়।
এক্ষেত্রে ভিডিওর সংখ্যা কোন ফ্যাক্টর নয়, আপনি যদি একটি ভিডিও তৈরি করে ইউটিউব কোম্পানির দেওয়া মনিটাইজেশন পলিসি পূর্ণ করতে পারেন তাহলে আপনি মনিটাইজেশন পাবেন।
অনেকেই মনে করেন প্রতিদিন ভিডিও দেওয়া প্রয়োজন youtube এ, এমনটা মোটেও নয় আপনার চ্যানেলের ক্যাটাগরি এবং আপনার ভিডিওর কোয়ালিটি ভালো হলে আপনি মাসে ৫ থেকে ১০ টি ভিডিও দিয়েও আপনার চ্যানেল ভিজিটর ও ওয়াচ টাইম পূর্ণ করতে পারবেন।
2. স্পন্সর ভিডিও করে টাকা ইনকাম
ইউটিউব থেকে আয় করার ৫টি উপায় সময়ের মধ্যে দ্বিতীয় নম্বরে রাখা হয়েছে স্পন্সর বা প্রমোশনাল ভিডিও তৈরি করে টাকা আয়কে।
বর্তমান সময়ে ইউটিউবে বিজ্ঞাপন থেকে একটি ইউটিউব চ্যানেল যেই পরিমান টাকা আয় করে তার থেকে অনেক বেশি টাকা ইনকাম করতে পারে স্পন্সর ভিডিও করে। মূলত ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইবার এবং ভিডিওতে কি পরিমাণ ভিউ আসে তার ওপর ভিত্তি করে স্পন্সর ভিডিওতে টাকা প্রদান করা হয়ে থাকে ইউটিউবারদের।
এমন অনেক ইউটিউব চ্যানেল রয়েছে যারা প্রতি মাসে বিজ্ঞাপন থেকে আয়ের কয়েক গুণ বেশি টাকা আয় করে স্পন্সর ভিডিও তৈরি করে।
এজন্য আপনাকে একটি ভালো ক্যাটাগরিতে নিয়মিত ভিডিও তৈরি করে যেতে হবে, এক সময় যখন আপনার চ্যানেলে পর্যাপ্ত পরিমাণ সাবস্ক্রাইবার আসবে এবং আপনার ভিডিওগুলোতে ভালো ভিউ আসবে তখন বিভিন্ন কোম্পানি আপনার সাথে যোগাযোগ করবে স্পন্সর ভিডিও তৈরি করার জন্য।
বর্তমান সময়ে বিভিন্ন নিস ভিত্তিক ইউটিউব চ্যানেল গুলিতে স্পন্সর ভিডিও তৈরীর অফার পাওয়া যায় বেশি বেশি।
আরও পড়ুনঃ
ফেসবুক থেকে টাকা আয় করার উপায়
3. এফিলিয়েট মার্কেটিং করে টাকা ইনকাম
ইউটিউব থেকে আয় করার ৫টি উপায় সমূহের অন্যতম একটি উপায় হচ্ছে এফিলিয়েট মার্কেটিং।
ধরুন আপনাকে কোন কোম্পানি স্পন্সর ভিডিও তৈরি করার জন্য আমন্ত্রণ করল না, তখন আপনি কিভাবে আপনার ইউটিউব চ্যানেল থেকে বিজ্ঞাপনের পাশাপাশি বাড়তি টাকা আয় করতে পারেন।
অবশ্যই পারবেন বর্তমানে একটি ইউটিউব চ্যানেল থেকে দ্রুততম সময় টাকা ইনকাম করার পদ্ধতি হচ্ছে এফিলিয়েট মার্কেটিং। আজ একটি ইউটিউব চ্যানেল তৈরি করে আজই আপনি এফিলিয়েট মার্কেটিং করে টাকা ইনকাম শুরু করে দিতে পারবেন।
ইউটিউব চ্যানেল থেকে এফিলিয়েট মার্কেটিং করে টাকা ইনকাম করার জন্য আপনি অন্য কোন কোম্পানির পণ্যের রিভিউ আপনার ইউটিউব চ্যানেলে প্রকাশ করবেন এবং youtube ভিডিও ডিসক্রিপশনে অথবা কমেন্টে পণ্যটির এফিলিয়েট লিংক প্রদান করবেন। লোকজন আপনার ভিডিও দেখে যখন লিংকে ক্লিক করে পণ্য ক্রয় করবে তখন আপনি সেখান থেকে কমিশন পাবেন।
এছাড়াও আপনি আপনার ইউটিউব ভিডিও তৈরি করার জন্য নিয়মিত যে সকল গেজেট গুলো ব্যবহার করেন সেই সকল গেজেট গুলোর এফিলিয়েট লিংক আপনার ইউটিউব চ্যানেল ডেসক্রিপশনে দিতে পারেন, যখনই আপনার কোন ভিউয়ার ডিসক্রিপশন থেকে লিংকে ভিজিট করে কোন পণ্য ক্রয় করবে সেখান থেকেও আপনি এফিলিয়েট কমিশন পাবেন।
বর্তমান সময়ে লোকজন ইউটিউব থেকে সব থেকে বেশি যে পদ্ধতি অনুসরণ করে টাকা ইনকাম করে থাকে সেগুলোর মধ্যে একটি হচ্ছে এফিলিয়েট মার্কেটিং। আরো পরিষ্কার করে বললে বিজ্ঞাপন, স্পন্সর ভিডিও এবং এফিলিয়েট মার্কেটিং সকল পদ্ধতি গুলোই ইউটিউব থেকে টাকা ইনকামের জন্য ব্যবহার করা যায়।
4. নিজের পণ্য বিক্রি করে টাকা ইনকাম
ইউটিউবে এমন অনেক চ্যানেল রয়েছে যারা উপরে উল্লেখিত তিনটি পদ্ধতির একটিতেও টাকা ইনকাম করতে ইচ্ছুক নয়। নিজের পণ্য ইউটিউব চ্যানেলের মাধ্যমে বিক্রি করা ইউটিউব থেকে আয় করার ৫টি উপায় সমূহের মধ্য থেকে একটি।
এই পদ্ধতিতে আপনি একটি ইউটিউব চ্যানেল তৈরি করে আপনার পণ্য সম্পর্কে youtube এ ভিডিও পাবলিস্ট করবেন। সেই পর্নের ভালো দিকগুলো ব্যবহারকারীর সামনে উপস্থাপন করার মাধ্যমে খুব সহজেই আপনি পণ্য বিক্রি করতে পারবেন।
নিজের পণ্য ইউটিউব চ্যানেলের মাধ্যমে বিক্রি করে এখন অনেকেই লক্ষ লক্ষ টাকা ইনকাম করছেন। আপনিও পারবেন ইউটিউব কখনোই আপনাকে বাধা দিবে না, তবে আপনাকে ভিডিও তৈরি করার সময় অবশ্যই ইউটিউব এর গাইড লাইন মেনে চলতে হবে।
ইউটিউব থেকে আয় করার ৫টি উপায় সময়ের মধ্যে নিজের পণ্য বা সেবা সেল করার পদ্ধতি টিকে পাঁচ নম্বরের রাখার কিছু যুক্তিযুক্ত কারণ রয়েছে, এর পিছনের কারণটি আপনি আমাদের কমেন্টের মাধ্যমে জানাবেন।
আরও পড়ুনঃ
ওয়ার্ডপ্রেস দিয়ে ওয়েবসাইট তৈরি করার স্টেপ বাই স্টেপ গাইড
5. সেবা বা Service বিক্রির মাধ্যমে টাকা ইনকাম
আপনি ইউটিউবে সার্চ করলে এমন অনেক চ্যানেল খুঁজে পাবেন যারা নিজের সেবা বা Service বিক্রির মাধ্যমে টাকা ইনকাম করছেন। আপনি যদি কোন বিষয়ে অভিজ্ঞ হন তাহলে আজই একটি ইউটিউব চ্যানেল খুলুন।
লোকেরা বর্তমানে বিভিন্ন বিষয়ে কনসালটেন্সির জন্য অভিজ্ঞদের কাছ থেকে সেবা নিয়ে থাকে। সঠিক পদ্ধতি অনুসরণ করে আপনি খুব সহজে আপনার সেবা বিক্রির মাধ্যমে ইউটিউব থেকে টাকা ইনকাম করতে পারবেন।
বর্তমান সময়ে ফ্রিল্যান্সার থেকে শুরু করে ডাক্তার, কৃষক সহ অনেক পেশার মানুষই নিজ নিজ সেবা বিক্রি করে ইউটিউব থেকে টাকা ইনকাম করছে। আপনিও চাইলে পারবেন, এজন্য আপনাকে সঠিকভাবে একটি ভিডিও তৈরি করার মাধ্যমে লোকেদের উপস্থাপন করতে হবে যে আপনি এ বিষয়ে দক্ষ এবং লোকের এ বিষয়ে পরামর্শ দিতে পারবেন।
ইউটিউব থেকে আয় করার ৫টি উপায় সম্পর্কে কিছু কথা
প্রিয় পাঠক আপনারা যারা এই নিবন্ধনটি এতক্ষণ পর্যন্ত পড়েছেন তাদেরকে অসংখ্য ধন্যবাদ। আপনাদের জানাতে চাই যে উল্লেখিত ইউটিউব থেকে আয় করার ৫টি উপায় ছাড়াও আরো অনেক উপায় রয়েছে।
তবে বর্তমান সময়ে 90% ইউটিউবার এই পাঁচটি ইউটিউব থেকে টাকা ইনকাম পদ্ধতি ব্যবহার করে থাকেন। আপনি যদি একবার আপনার ইউটিউব চ্যানেলটি ভালোভাবে গ্রো করতে পারেন তাহলে আপনার টাকা ইনকামের পথ গুলো ভুলে যাবে।
তবে youtube চ্যানেল তৈরি করার পর শুরুর দিনগুলোতে কখনোই আপনি টাকার দিকে লক্ষ্য না করে মানসম্মত ভিডিও তৈরি করুন।
ধীরে ধীরে যখন আপনার ইউটিউব চ্যানেলটির ভিডিওগুলোতে পর্যাপ্ত ভিভো আসা শুরু করবে তখন আপনার আয়ের উৎস গুলো আরো বৃদ্ধি পাবে।
আরও পড়ুনঃ
ব্লগ পোস্ট কি? Blog Post কিভাবে লিখতে হয়
উপসংহার,
ইউটিউব থেকে আয় করার ৫টি উপায় সম্পর্কিত নিবন্ধনটি আপনার কেমন লেগেছে অবশ্যই আমাদের কমেন্ট করে জানান।
আমি একজন ক্ষুদ্র ব্লগার হিসেবে আপনাদের অনুরোধ করবো আপনারা যে যে পেশায় রয়েছেন ওই পেশায় কি বাধা প্রতিবন্ধকতা রয়েছে এসব বিষয়গুলো তুলে ধরে ভিডিও তৈরি করুন।
আপনি ইউটিউবে আপনার পেশার বিষয়ে খুঁজুন অবশ্যই আপনি চ্যানেল তৈরি করা ও ভিডিও তৈরি করার আইডিয়াগুলো পেয়ে যাবেন।
ইউটিউব থেকে আয় করার ৫টি উপায় ব্যবহার করে আপনি লক্ষ লক্ষ টাকা ইনকাম করবেন কবে এর কথা চিন্তা না করে প্রথমে চ্যানেল তৈরি করুন এবং নিয়মিত ভিডিও তৈরি করতে থাকুন। এবং দৃঢ়বিশ্বাস রাখুন একসময় আপনার ইউটিউব চ্যানেলটি থেকে আপনি প্রতি মাসে লক্ষ টাকা ইনকাম করবেন।
Back